জাপান এয়ারপোর্টের রহস্যজনক একটি ঘটনা - একজন মানুষ বিমানবন্দরে এলেন এমন একটি দেশের পাসপোর্ট নিয়ে, যে দেশ বাস্তবে নেই – তারপর যা ঘটলো, তা আপনাকে চমকে দেবে!
একজন মানুষ বিমানবন্দরে এলেন এমন একটি দেশের পাসপোর্ট নিয়ে, যে দেশ বাস্তবে নেই – তারপর যা ঘটলো, তা আপনাকে চমকে দেবে!
বিশ্বজুড়ে ঘটে যাওয়া সব অদ্ভুত ঘটনা আর রহস্যের মধ্যে “The Man from Taured” গল্পটি আজও মানুষকে অবাক করে, ভাবিয়ে তোলে। এই ঘটনাটি শুধু একটি ভিনদেশি পাসপোর্টধারী ভদ্রলোককে ঘিরে নয়, বরং এটি প্রশ্ন তোলে বাস্তবতা, সময়ভ্রমণ, সমান্তরাল পৃথিবী, এবং আন্তর্জাতিক রহস্যের উপর।
এমন একজন মানুষ ১৯৫৪ সালে জাপানের টোকিও বিমানবন্দরে এসে দাঁড়ালেন, যার পাসপোর্টে লেখা ছিল—Taured নামক একটি দেশের নাম। কিন্তু সেই দেশ বিশ্বের কোনো মানচিত্রেই ছিল না।
এই লেখায় আমরা জানবো পুরো ঘটনাটি, কীভাবে তা ঘটেছিল, কেন আজও অনেক মানুষ বিশ্বাস করে এটি সত্য ছিল, এবং এর পিছনে কী কী সম্ভাব্য ব্যাখ্যা থাকতে পারে।
ঘটনাটি শুরু হয় ১৯৫৪ সালের এক গরম দিনে
টোকিওর হানেদা বিমানবন্দর (Haneda Airport)। এক ব্যক্তি ফ্রান্স থেকে জাপানে এসেছেন। তার পরনে ছিল একটি ব্যবসায়িক স্যুট, হাতে একটি স্টিলের ব্রিফকেস। দেখে মনে হচ্ছিল তিনি একজন কর্পোরেট প্রতিনিধি বা কূটনীতিক।
ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা তার পাসপোর্ট দেখে থমকে যান।
কারণ পাসপোর্টে লেখা ছিল—“Taured”। তারা এমন কোনো দেশের নাম শুনেননি। কর্মকর্তারা দ্রুত গুগল (তৎকালীন অবশ্য ছিল না), মানচিত্র এবং নথিপত্র ঘাঁটলেন। ফলাফল: Taured বলে কোনো দেশের অস্তিত্ব নেই।
পাসপোর্ট ছিল আসল!
অবাক করার মতো বিষয় হলো, পাসপোর্টটি পুরোপুরি বৈধ এবং সত্যিকারের মনে হচ্ছিল।
তাতে ছিল ভিসা স্ট্যাম্প, ইমিগ্রেশন সীল, এবং আগের সফরের নানা প্রমাণ। এমনকি পুরোনো পাসপোর্টের সঙ্গে মিলও পাওয়া যায়।
যখন কর্মকর্তারা তাকে প্রশ্ন করেন, তিনি একরকম বিরক্ত হয়ে বলেন:
"Taured তো ইউরোপেই আছে। এক হাজার বছর ধরে আমাদের জাতি টিকে আছে।"
তিনি আরও দাবি করেন, তার দেশ স্পেন এবং ফ্রান্সের মাঝামাঝি অবস্থিত, এবং এটি একটি স্বীকৃত রাষ্ট্র। অথচ, সে জায়গায় বর্তমান মানচিত্রে শুধু অ্যান্ডোরা (Andorra) আছে।
তার পরিচয়ও ছিল স্পষ্ট
তিনি একটি ইউরোপীয় কোম্পানির প্রতিনিধি ছিলেন, এবং তিনি জাপানে একটি ব্যবসায়িক সভায় অংশ নিতে এসেছেন।
তার ব্রিফকেসে ছিল নথিপত্র, কোম্পানির চিঠি, ব্যাংকের কাগজ, এবং লেটারহেড—all authentic-looking.
কর্মকর্তারা সন্দেহ বাড়িয়ে তাকে একটি হোটেলে নজরবন্দি করে রাখেন।
রাতারাতি তার জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয় এবং দুইজন গার্ড পাহারায় থাকেন।
পরদিন সকালে: মানুষটি গায়েব!
সবচেয়ে রহস্যজনক বিষয় ঘটলো পরদিন সকালে।
কর্মকর্তারা যখন ঘরে ঢোকেন, তখন দেখেন—রুম ফাঁকা। মানুষটি নিখোঁজ।
তিনতলা হোটেলের জানালা বন্ধ ছিল। কোনো গোপন পথ নেই, পাহারা ছিল কঠোর।
কিন্তু Mosquito fish এর মতোই নিঃশব্দে সেই মানুষটি গায়েব হয়ে গেছেন!
তার সমস্ত ডকুমেন্ট, পাসপোর্ট, ফটো, এবং পরিচয়পত্র সবকিছু মিলিয়ে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এটা কি সময়ভ্রমণ, সমান্তরাল পৃথিবী, নাকি ষড়যন্ত্র?
এই ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে অনেকেই ধারণা করেছেন যে—
-
এটি একটি সমান্তরাল মহাবিশ্ব (parallel universe) এর ফাঁক থেকে আসা কেউ ছিল।
-
কেউ বলছেন, তিনি ছিলেন একজন টাইম ট্রাভেলার—ভবিষ্যতের পৃথিবী থেকে ভুল করে অতীতে এসে পড়েছেন।
-
আবার অনেকে বলছেন, এটি হতে পারে সরকারি ষড়যন্ত্র বা গোপন প্রকল্পের অংশ।
বাস্তবতা নাকি কল্পকাহিনি?
কিছু গবেষক বলছেন, এই গল্পটি সম্ভবত ইন্টারনেট কল্পনা বা শহুরে কিংবদন্তি (urban legend)।
১৯৫৪ সালের কোনো সংবাদপত্রে এমন ঘটনার প্রমাণ নেই, তাই সন্দেহের জায়গা থেকেই যায়।
তবে আশ্চর্যজনক ব্যাপার হলো, এই গল্পটি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ার পর বহু মানুষ এটিকে সত্য বলে বিশ্বাস করতে শুরু করে। কারণ—
-
এতগুলো মিল,
-
স্পষ্ট বিবরণ,
-
এবং গল্পের যুক্তিগুলি মানুষকে ভাবায়।
শেষ কথা: সত্যি, না কি গল্প?
আজও এই ঘটনা একটি রহস্য হয়ে রয়ে গেছে। সত্যই যদি এমন কেউ থাকতেন, তবে তিনি কোথা থেকে এসেছিলেন? কীভাবে গায়েব হলেন? তার দেশ Taured কি কোথাও এখনো লুকিয়ে আছে, নাকি সে অন্য এক বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি?
আপনি কী ভাবেন? এটা কি শুধু গল্প, নাকি ইতিহাসের পাতায় হারিয়ে যাওয়া এক সত্য?
আপনি যদি এমন আরও রহস্যময়, অদ্ভুত আর বাস্তব-সদৃশ গল্প পড়তে চান, আমাদের ব্লগটি অনুসরণ করুন!
পাঠকের জন্য প্রশ্ন:
আপনার সামনে যদি এমন একজন মানুষ এসে দাঁড়ায় যার পরিচয়ই পৃথিবীর কোনো মানচিত্রে নেই, আপনি কী করবেন?
Comments
Post a Comment